সময়মতো চিকিৎসা ও সঠিক সিদ্ধান্তই জীবন বাঁচাতে পারে
পিত্তথলির ক্যান্সার (Gallbladder Cancer) একটি জটিল ও ভয়াবহ রোগ, যেটি প্রাথমিক অবস্থায় নীরবে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধরা পড়ার আগেই অনেক সময় দেরি হয়ে যায়। তবে সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা শুরু করলে জীবনের সম্ভাবনা বাড়ানো যায়।
এই লেখায় জানবো — পিত্তথলির ক্যান্সার কী, কী করবেন, চিকিৎসার পদ্ধতি এবং কখন জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
🔍 পিত্তথলির ক্যান্সার কীভাবে হয়?
পিত্তথলি হলো যকৃতের নিচে অবস্থিত একটি ছোট থলি, যেখানে পিত্ত জমা থাকে। যখন এই কোষগুলোতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় এবং তা দেহের অন্যান্য অংশে ছড়ায়, তখন তাকে Gallbladder Cancer বলা হয়।
⚠️ পিত্তথলির ক্যান্সারের লক্ষণ:
প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ না-ও থাকতে পারে। তবে কিছু সাধারণ উপসর্গ হলো:
ডান পাশের পেটব্যথা (উপরের অংশে)
দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস্ট্রিক ও হজমে সমস্যা
বমিভাব ও ক্ষুধামান্দ্য
চোখ ও চামড়ায় হলদে ভাব (জন্ডিস)
ওজন হ্রাস ও দুর্বলতা
পেটের ফোলা ভাব বা পেটের চাকা
🧪 কীভাবে ধরা পড়ে?
আলট্রাসনোগ্রাফি (USG)
CT Scan / MRI / MRCP
Tumor Marker Test (CEA, CA 19-9)
বায়োপসি বা অপারেশনের পর হিস্টোপ্যাথলজি রিপোর্ট
অনেক সময় Gallbladder অপারেশনের (পাথরের জন্য) পর রিপোর্টে হঠাৎ ক্যান্সার ধরা পড়ে।
✅ পিত্তথলিতে ক্যান্সার ধরা পড়লে কী করবেন?
১. ভয় পাবেন না, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন
ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অনেক সময় সম্পূর্ণ সার্জারির মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব।
২. বিশেষজ্ঞ সার্জনের পরামর্শ নিন (HPB / GI Surgeon)
অভিজ্ঞ হেপাটো-বিলিয়ারি সার্জন বা ক্যান্সার সার্জনের মূল্যায়ন খুব জরুরি।
৩. প্রয়োজনে টিম-ভিত্তিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন:
অনেক সময় প্রয়োজন হয় সার্জন, অনকোলজিস্ট, গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট, এবং রেডিওলজিস্টের সমন্বয়ে চিকিৎসা।
🛠️ চিকিৎসার ধাপ:
ক্যান্সারের অবস্থা | চিকিৎসা |
---|---|
ক্যান্সার শুধুমাত্র পিত্তথলিতে | Radical Cholecystectomy (সম্পূর্ণ পিত্তথলি ও আশপাশের টিস্যু কেটে ফেলা) |
আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছে | বড় অপারেশন + কেমোথেরাপি |
ছড়িয়ে গেছে দূরের অঙ্গে | অপারেশন না করে কেমো বা প্যালিয়েটিভ কেয়ার |
🤔 কখন ঝুঁকি বেশি?
দীর্ঘদিনের পাথর থাকা পিত্তথলিতে
পলিপ (১ সেন্টিমিটার এর বেশি)
Porrcelain Gallbladder (দেয়াল শক্ত হয়ে যাওয়া)
পুরনো প্রদাহ