স্বাস্থ্যবান লিভারের জন্য দৈনন্দিন সচেতনতা ও জীবনশৈলীর পরিবর্তন
লিভার (যকৃত) আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি খাদ্য পরিপাক, টক্সিন নিষ্কাশন, ও হরমোন ভারসাম্য রক্ষার মতো শতাধিক কার্য সম্পাদন করে। তাই লিভারকে সুস্থ রাখা মানে পুরো শরীরকে ভালো রাখা। নিচে উল্লেখ করা হলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ যা অনুসরণ করলে আপনি লিভারকে সুস্থ রাখতে পারবেন:
✅ ১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
ফ্রেশ ফলমূল ও সবজি খান প্রতিদিন
অতিরিক্ত তেল, চর্বি ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রক্রিয়াজাত (processed) খাবার ও সফট ড্রিঙ্কস কমিয়ে দিন
রোজ পর্যাপ্ত পানি পান করুন (৮–১০ গ্লাস)
🚫 ২. অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল লিভারে চর্বি জমিয়ে ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস এবং শেষ পর্যন্ত লিভার সিরোসিস সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালকোহল একেবারে পরিহার করাই উত্তম।
🧬 ৩. হেপাটাইটিস এ ও বি’র টিকা নিন
হেপাটাইটিস ভাইরাস লিভারকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সময়মতো হেপাটাইটিস বি’র টিকা নেওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন নিশ্চিত করা জরুরি।
⚖️ ৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
মুটিয়ে যাওয়া বা স্থূলতা লিভারে চর্বি জমার অন্যতম প্রধান কারণ। এটি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) সৃষ্টি করতে পারে।
🏃 ৫. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো বা হালকা ব্যায়াম লিভার ও পুরো শরীরের জন্য উপকারী।
💊 ৬. ওষুধ গ্রহণে সতর্ক থাকুন
অনেক ব্যথানাশক বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ লিভারের ক্ষতি করতে পারে। যেকোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা উচিত নয়।
🩺 ৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
বয়স ৩০ পেরোলেই প্রতি বছর লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) সহ কিছু রুটিন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। যেসব উপসর্গে সচেতন হবেন:
চোখ বা চামড়ায় হলদে ভাব
ডান পাশের পেটব্যথা
অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
ক্ষুধামান্দ্য ও ওজন কমে যাওয়া
🩻 আপনার লিভার সুস্থ তো?
লিভার সম্পর্কিত সমস্যা অনেক সময় নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব। আপনার যদি কোনো সন্দেহ থাকে, দেরি না করে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিন।